শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

আপডেট
দেশ-বিদেশে সম্পদের পাহাড়,আত্মগোপনে সাবেক এমপি ওয়াহেদ

দেশ-বিদেশে সম্পদের পাহাড়,আত্মগোপনে সাবেক এমপি ওয়াহেদ

দেশ-বিদেশে সম্পদের পাহাড়,আত্মগোপনে এমপি ওয়াহেদ

শায়লা শারমিন,ভালুকা থেকে ফিরে: মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ পাপুয়া নিউগিনির নাগরিক। তিনি ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্য (এমপি) থাকাকালে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিপুল সম্পদ গড়ার পাশাপাশি বিদেশেও অর্থ পাচার করেছেন প্রায় হাজার কোটি টাকা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ময়মনসিংহ নগরী ও ভালুকা বিভিন্ন স্থানে এবং বিদেশে থাকা সম্পদ মিলিয়ে এমএ ওয়াহেদের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। অবৈধ সম্পদের এমন পাহাড় গড়েও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার যাবতীয় অবৈধ সম্পদের তথ্য দিয়ে অভিযোগ করা হয়।

দুদক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাস্তি নিশ্চিত করলে অবৈধ সম্পদশালীদের কাছে এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে অভিযোগকারী জানান। অনুসন্ধানে জানা যায়, এমএ ওয়াহেদ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ময়মনসিংহ জেলা শাখায় উপ-কর কমিশনার কার্যালয়ে (সার্কেল-২) পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ৯৪৬ টাকার কর দিয়েছেন। অথচ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ১০ কাঠা জমির ওপর বহুতল ভবনসহ (বাড়ি নং-৯, রোড নং-২, চান মিয়া হাউজিং) তিনটি বাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রীর নামেও এই এলাকায় রয়েছে শতকোটি টাকার সম্পত্তি। ভালুকা বাজারে ২৯ শতাংশ জমির ওপর ১৪তলা বিশিষ্ট বিশাল এক মার্কেট রয়েছে। ভালুকার আঙ্গারগাড়ায় তিন বিঘা জমির ওপর সুইমিংপুলসহ একটি বাড়ি, পাঁচ বিঘা জমির ওপর নির্মাণাধীন একটি বাড়ি, আঙ্গারগাড়া বাজারে দুটি পাঁচতলা ভবন ও একটি তিনতলা বাড়ি রয়েছে। ময়মনসিংহ শহরে কৃষ্টপুর এলাকায় পাঁচতলা ভবন,বাইপাস ১০০ একক জমি রয়েছে। এছাড়া নামে ও বেনামে প্রায় হাজার বিঘা সম্পত্তি রয়েছে।

দেশ থেকে অর্থ পাচার করে এমএ ওয়াহেদ পাপুয়া নিউগিনিতে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে দেশ বেশ এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (পি.ও. বক্স ২৬২, বোরোকো, ন্যাশনাল ক্যাডর্টাএল ডিস্ট্রিক্ট, পাপুয়া নিউগিনি)। গর্ডনস-সেন্ট্রাল সুপারমার্কেটে ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি, সার্ভিস স্টেশন, ২ এক্স বেকারি, ২ এক্স ফাস্ট ফুড। গর্ডনস-গর্ডন হোলস এবং ডেলিভারি ডিপো। দেশ দেশ পাইকারি ও খুচরা, দ্রুত খাদ্য, বেকারি এবং ফ্রিজার ডিপার্টমেন্ট স্টোর। লয়েস রোড, কোনেডোবু, পাইকারি ও খুচরা, ফাস্ট ফুড, বেকারি এবং ফ্রিজার ডিপার্টমেন্ট স্টোর। কৌরা ওয়ে, টোকাররা-ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি, ফাস্ট ফুড এবং বেকারি। টোকাররা-ফ্রিজার, কনটেইনার ইয়ার্ড, পরিবহণ, লজিস্টিক এবং কর্মশালা। সোগেরি রোডে নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পোলট্রি মাংস প্রক্রিয়াকরণ, ফিড মিল, সার প্যাকেজিং, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, এগ্রো-সুপার মার্কেট, সবজি ও ফল চাষ এবং মাছ চাষসহ কৃষিকাজ। সরকারের অনুমতি না নিয়ে অবৈধভাবে দেশ থেকে টাকা পাচার করে বিদেশে এসব সম্পদ গড়েছেন তিনি। অবৈধ নাগরিক ওয়াহিদ : অনুসন্ধানে জানা যায়, এমএ ওয়াহেদ বাংলাদেশের একজন অবৈধ নাগরিক। তবে জন্মসূত্রে তিনি একজন বাংলাদেশি। তিনি ১৯৬৬ সালের ১২ এপ্রিল ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার আঙ্গারগাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৮৬৭২৩৬৯৫৫৩। বাংলাদেশি পাসপোর্ট নম্বর এ-০৩৩০৭৬৩২।

বাংলাদেশি নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তিনি পাপুয়া নিউগিনির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট নম্বর ই-২২৯৫২৩। এতে করে তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গত ১২ মার্চ প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনের আদেশ লঙ্ঘন করেছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বলবৎ আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের কোনো নাগরিক মিসর, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, আলজেরিয়া, সুদান, মরক্কো, ঘানা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তিউনিসিয়া, সিয়েরা লিয়ন, লিবিয়া, কক্সেগা, লাইবেরিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইরিত্রিয়া, গাম্বিয়া, বতসোয়ানা, মরিশাস, বধাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, সুরিনাম, আর্জেন্টিনা, পেরু, ইকুয়েডর, চিলি, উরুগুয়ে, গায়ানা, প্যারাগুয়ে, কিউবা, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, হাইতি, বাহামা, জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, ডমিনিকা, সেন্ট লুসিয়া, বার্বাডোস, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস অথবা ফিজির নাগরিকত্ব গ্রহণ করলেও ওই দেশের নাগরিকত্ব প্রাপ্তির জন্য পঠিত শপথ বাক্যে যদি বাংলাদেশের প্রতি আনুগত প্রত্যাহারের শপথ না থাকে, তাহলে তাদের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বহাল থাকবে। উক্ত দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে হবে না।

সাবেক সাংসদ ওয়াহেদের বেপরোয়া আট খলিফা : গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পাঞ্চল উপজেলা ভালুকা। সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল ওয়াহেদ বিজয়ী হওয়ার পর উপজেলা সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসা নিয়ন্ত্রণের জন্য আট জন ব্যাক্তিকে নিয়োগ করেছিলেন । এই আট ব্যাক্তিকে খলিফা ক্ষেতাব দিয়েছেন সাবেক এমপি এমএ ওয়াহেদ। সাবেক এমপির নিযুক্ত খলিফারা হলেন, ভালুকা আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকার, জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিঃ আবু সাহাদত সায়েম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি জাকির হোসেন শিবলী, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এজাদুল হক পারুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক কেবিএম আসাদুজ্জামান সানা, ভালুকা আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, উপজেলা যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক খোকন হোসেন ঢালী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইফতেখার আহাম্মেদ সুজন।

এই খলিফাদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল শান্তির নগরী ভালুকা। উপজেলার বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সাবেক এমপি ওয়াহেদ মনোনিত ৮ খলিফারা। আরও বেশ কিছু শিল্প কারখানার ব্যাবসা দখলে নিতে ওয়েস্টিজ ও জুট আটকে রেখেছে খলিফারা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে হয়রানি করেন। শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নানা রকম হুমকী ধমকি এবং হামলা করেছেন। শিল্প কারখানা থেকে কোন প্রকার কাভার্ড ভ্যান বের হলে তা তারা চেক করে বের করতো। গেটে অস্ত্রসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের পাহারায় বসিয়েছেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ওইসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওয়েস্টিজ ও জুট আটকে থাকার কারণে তাপদাহে বা বৈদ্যিতিক শর্টসার্কিটে যে কোন সময় অগ্নিকান্ডের মতো বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে শিল্প মালিকরা আতঙ্কে দিন পার করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন অগ্নিকান্ডের মতো দূর্ঘটনা ঘটলে এ দায়ভার সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ ও তার খলিফাদেরই নিতে হবে। এখন তারা সব পালিয়েছে। গত রমজান মাসে একটি ইফতার মাহফিল পূর্ববর্তী অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ আট খলিফাদের নিয়ে একটি বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যের পর খলিফারা আরও উৎসাহিত হয়। তার পর থেকে খলিফারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। সেই বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই বক্তব্যের পর শিল্পপতিরা আরও শঙ্কিত হয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

শিল্প কারখানার ব্যাবসা দখল : সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ শপথ নেওয়ার পর উপজেলার সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসা দখলের উৎসবে মাতে এমপি মনোনিত সেই আট খলিফারা। উপজেলার বিভিন্ন ফ্যাক্টরি গেটে দেশিও অস্ত্রসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী বসিয়ে কারখানার কর্মকর্তাদের নানা রকম হুমকী ধমকি ও মারধর করে। কয়েকটি ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় মামলা, জিডি ও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে শিল্প কারখানার ব্যাবসা। এমনকি যারা পূর্বে ব্যাবসা করতো তাদের বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের কাশর গ্রামের টিএম টেক্সটাইলের ব্যাবসা দখলের জন্য হবিরবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মোহাম্মদ নিপুনের নেতৃত্বে যুবলীগ নেতা জর্জ মিয়ার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এসময় জর্জ মিয়ার বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হবিরবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মোহাম্মদ নিপুন ও যুবলীগ নেতা নাঈমসহ চার জনকে আসামী করে ভালুকা মডেল থানায় ব্যাবসায়ী জর্জ মিয়া একটি মামলা রুজু করেন। এ মামলায় নাঈম নামের এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।

তারপর একের পর এক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়ে দখল নেওয়া শুরু হয় শিল্প কারখানার ব্যাবসা। কনজুমার নিটেক্স লিঃ এর ব্যাবসা করা সাবেক সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন ধনু ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান মামুনের ব্যাবসা ছিনিয়ে নেয় এমপি মনোনিত খলিফা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জাকির হোসেন শিবলী, উপজেলার ধামশুর গ্রামের সিমকো নামের শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যাবসা করা যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন মাহির ব্যাবসা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করে দখল নেয় এমপি মনোনিত খলিফা ভালুকা আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকার। পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের আর্টি কম্পোজিটে ব্যাবসা করা স্থানীয় কাউন্সিলর ও আওামীলীগ নেতা হুমাউন কবিরের ব্যাবসা ও ইনডেক্স ফিড মিলের ব্যাবসা ছিনিয়ে নেয় এমপি মনোনিত খলিফা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ছানা।

উপজেলার মাস্টারবাড়ি নারিশ পোল্ট্রি ফিড মিলের ব্যাবসা ছিনিয়ে নেয় এমপি ওয়াহেদ মনোনিত খলিফা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জাকির হোসেন শিবলী, উপজেলার ধামশুরের আওয়ামীলীগ নেতার কাছ থেকে বিষ ফ্যাক্টরির ব্যাবসা ছিনিয়ে নেয় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এজাদুল হক পারুল, উপজেলার মেহেরাবড়ির এপারেলস ডায়িংয়ের ব্যাবসা দখল করে নেয় এমপি মনোনিত খলিফা উপজেলা যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক খোকন হোসেন ঢালী, উপজেলা হাজির বাজারের তাইপে বাংলা ফেব্রিকসের ব্যাবসা দখল করে নেয় এমপি ওয়াহেদ মনোনিত খলিফা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইফতেখার আহাম্মেদ সুজন। আরও বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওয়েস্টিজ মালামাল বের করতে দেয়নি সাবেক এমপি ওয়াহেদের নিযুক্ত খলিফারা। ফলে এসব শিল্প কারখানার জুটে তিব্র তাপদাহ ও বৈদ্যিতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের মতো বড় ধরনের দূর্ঘটনা যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন শিল্প মালিকরা।

হাটবাজার ও সড়কে অবৈধ চাঁদাবাজি: হাটবাজার ও পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন সাবেক এমপির নিযুক্ত খলিফা ভালুকা আঞ্চলিক শ্রমীকলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকারের ছোট ভাই কামরুল সরকার ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জাকির হোসেন শিবলীর ছোট ভাই রাসেল সরকার। সাবেক সংসদ সদস্যের অন্যতম নির্বাচনি ইসতেহার ছিলো হাটবাজার ও সড়কে চলাচলকারী ছোট বড় সব যানবাহন চাঁদাবাজি মুক্ত করা। এমপির কঠোরতার পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বচনের পর কিছুদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও খলিফা নজরুল ও জাকিরের হস্থক্ষেপে পুনরায় চালু হয়েছে এ চাঁদাবাজি।কামিয়েছে কোটি কোটি টাকা। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এমপি ওয়াহেদের নির্বাচন না করায় হয়রানী ও মারধর : সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াহেদের ট্রাক প্রতিকের নির্বাচন যারা করেন নাই তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানী, হুমকী-ধমকী ও মারধর করা হয়েছিল। উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ ট্রাক প্রতিকের নির্বাচন না করে নৌকা প্রতিকের নির্বাচন করায় তাকে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে দেয়নি সাবেক এমপির সমর্থকেরা।

গত পহেলা এপ্রিল সোমবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে গিয়ে ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামকে মারধর করে। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সহায়ক সেক্টর হচ্ছে পোশাক শিল্প। বর্তমান সময়ে দেশে ডলার সংকট, গ্যাস সংকট, বিদ্যুৎ সকটের মধ্য দিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নেওয়াই আমাদের জন্য কষ্টকর হচ্ছে। কোন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক শ্রমিকদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন। এমন সময় সাবেক সংসদ সদস্যের লোকজনের অন্যায় ভাবে নানা রকম হয়রানী আমাদের জন্য দুঃখজনক। আমরা শিদ্ধান্ত নিয়েছি এ বিষয়ে আমারা সাংগঠনিক ভাবে সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাবো। আমরা সরকারকে টেক্স দিয়ে ব্যাবসা করি। আমাদের ব্যাবসায়ীক নিরাপত্তা ও পরিবেশ সরকারকেই দিতে হবে।

জানতে চাইলে এমএ ওয়াহেদ এর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তার ম্যানেজার জিকু প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, ভাইয়ের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এত সম্পদ নেই। যা আছে বৈধ। তিনি বিদেশে ব্যবসা করেন। এমপি বর্তমানে চীনে আছেন। আপনি চাইলে রাতে ইমুতে কথা বলতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, সাবেক এমপি সাবেক কর ফাঁকি দেন নাই। তার টাকা পাচারের প্রশ্নই উঠে না। তবে তার টাকা পয়ঁসা আছে। এগুলো ব্যবসার। তিনি বিদেশ থেকে টাকা এনে দেশে বাড়িঘর নির্মান করেছেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |